কীভাবে আপনার বাচ্চাকে মৌসুমী জ্বর থেকে নিরাপদ রাখবেন
শিশুদের জন্য মৌসুমী ফ্লু মানে বাবা-মার জন্য সেটা একটা দুঃস্বপ্নের মতো। এমনিতে জন্মের পর থেকে নবজাতকের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশ কম থাকে। তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অত ভালো থাকে না, বাইরের রোগজীবাণু এ সময় তাদের জন্য হুমকির কারণ হতে পারে। এজন্যই জন্মের পর থেকে শিশুদের টিকা দেওয়া হয়। বিশেষ করে উষ্ণ ও আর্দ্র আবহাওয়ার দেশে মৌসুমী ফ্লু হওয়ার প্রবণতা শিশুদের জন্য অনেকটা বেশি থাকে। তবে কিছু কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করলে বাচ্চাদের মৌসুমী ফ্লু বা ঠাণ্ডার মাত্রা কমানো যায়।
১) যত পারুন হাত ধুয়ে ফেলুন
আপনাকে মনে রাখতে হবে, বাইরে থেকে আসা মানে আপনার হাত রোগজীবাণূর আখড়া। কখনোই নোংরা হাতে বা বাইরে থেকে আসার পর হাত না ধুয়ে শিশুকে স্পর্শ করবেন না। নবজাতক শিশুকে স্বাভাবিকভাবেই সবাই একটু আদর করতে চাইবে, কেউ কেউ কোলে নিতে বা চুমু খেতেও চাইবে। সবাইকে এর আগে হাত পরিষ্কার করে আসতে বলুন। বাচ্চাকেও আপনি একইভাবে পরিষ্কার রাখতে পারেন। সেজন্য জাস্ট ফর বেবি ওয়াশ বা জাস্ট ফর বেবি সোপ ব্যবহার করতে পারেন।
২) নবজাতকের সামনে হাঁচি বা কাশি দেবেন না
আপনার হাঁচি ও কাশি নবজাতকের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে। অন্তত আপনার শিশুর ভালোর জন্য সবসময় কাশার সময় টিস্যু পেপার ব্যবহার করুন। যদি হাতের কাছে টিস্যু পেপার না থাকে তাহলে কনুই দিয়ে কাশি বা হাঁচি ঢাকুন, কখনো সেটা বাচ্চার সামনে খোলা অবস্থায় করবেন না। হাঁচির ক্ষেত্রেও এভাবে মুখ ঢেকে রাখতে হবে। আর সম্ভব হলে হ্যান্ডওয়াশ বা স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
৩) জনসমাগম যথাসম্ভব বর্জন করুন
আপনার নবজাতক শিশুকে বাইরে যত কম নিতে পারেন, বিশেষ করে আবহাওয়া বদলের সময়, ততই ভালো। অবশ্যই বাইরের খোলা হাওয়া শিশুর দরকার, কিন্তু ভীড়ভাট্টা আছে এমন জায়গায় বাচ্চাকে নিয়ে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ হবে না। ধরুন যদি আপনার শিশুকে বাইরে নিয়ে যেতেই হয়, তাহলে তাকে স্ট্রলারে নিয়ে ওপরে একটা কম্বল রেখে দিন। তাহলে বাইরের ধুলোবালি চট করে গায়ে লাগবে না।
৪) বুকের দুধ পান করানঃ
বুকের দুধ পান করালে আপনার বাচ্চার সুস্থ থাকার সম্ভাবনা অনেকটা বেড়ে যায়। এটা গবেষণায় পরীক্ষিত যেসব বাচ্চারা বুকের দুধ পান করে তাদের অসুস্থ হওয়ার প্রবণতা অন্য বাচ্চাদের তুলনায় কম থাকে। অবশ্যই, বুকের দুধ খেলে বাচ্চাদের অসুখ হবে না এরকম কোনো কথা নেই। তবে অবশ্যই বুকের দুধ খেলে বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তাতে বাড়ে।
৫) দরকার হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
বাচ্চাদের যখন তখন রোগবালাই হতেই পারে, বিশেষ করে মৌসুমী ফ্লু তো স্বাভাবিক। কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন? এমনিতে শিশুদের জ্বর হলে তাপমাত্রা দ্রুত বেড়ে যেতে থাকে। যদি তিন মাসের কম বয়সী শিশুর তাপমাত্রা ১০০.৩ ফারেনহাইটের বেশি হয় তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। আর ছয় মাস বয়সীদের ক্ষেত্রে ১০০.৪ ফারেনহাইতের ওপর তাপমাত্রা উঠলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
৬) টিকা দিন, সুস্থ থাকুন
নিশ্চিত করুন আপনার শিশুকে ইনফ্লুয়েঞ্জাওসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় টিকা দেওয়া হয়েছে। তবে বাচ্চার দেখাশুনা যারা করে তাদেরও অন্যান্য রোগের টিকা নেওয়া থাকা উচিত। কারণ তারা বাচ্চার সবচেয়ে কাছাকাছি আসে। আর ছয় মাস না হলে ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকা নেওয়া যায় না, সেজন্য নিশ্চিত করতে হবে বাচ্চার আশেপাশের সবার দরকারি টিকা নেওয়া থাকে।
Reference
https://www.cdc.gov/flu/highrisk/infantcare.htm
https://www.marchofdimes.org/complications/influenza-and-your-baby.aspx#
https://www.healthywomen.org/content/article/6-ways-protect-your-baby-during-cold-and-flu-season