কান্নারত শিশুকে কীভাবে শান্ত করবেন (০-৬ মাস)
নবজাতকের যত্ন নেওয়া অবশ্যই বড় একটা দায়িত্ব। শিশু কী চায় এবং কীভাবে তাকে শান্ত করতে হয় সেটা রাতারাতি বোঝা সম্ভব নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নতুন মায়েরা এসব শেখে। শিশু কান্না না থামালে সেটা অবশ্যই কঠিন একটা সময়। আপনার দুশ্চিন্তা হতে পারে হয়ত শিশুর কোনো সমস্যা হয়েছে, আবার এমনও ভাবতে পারেন সন্তান লালন পালনের কাজটা হয়ত ঠিকমত করতে পারছেন না। কিন্তু ঠিক পদ্ধতি প্রয়োগ করলে সন্তানকে শান্ত করা সম্ভব।
বাচ্চা অনেক কারণেই কান্না করতে থাকে, আসলে এর মধ্যেই তারা মা-বাবার সাথে যোগাযোগ করে। শিশু মনোযোগ আকর্ষণের জন্য কান্না করতে পারে, এর মাধ্যমে তারা তাদের দরকারটা জানান দেয়। কোন কান্নার মাধ্যমে কী বলতে চায় সেটা নিরূপণ করা বেশ কঠিন। তবে যতই সময় যাবে এবং আপনি মনোযোগ বেশি দেবেন, তখন বুঝতে পারবেন আসলে শিশু কী চায়। ঘুমের কারণে, ভেজা বা ময়লা ডায়পারের জন্য, ক্ষুধা পেলে, শব্দ হলে, খাবারে অ্যালার্জি, ব্যথা, অসুস্থতা এমনকি ভয়ের জন্যও শিশু কান্না করতে পারে।
যতক্ষণ আপনি শিশুর দাবি না মেটাবেন ততক্ষণ সে কান্না করতেই থাকবে। উদাহরণস্বরূপ, খেয়াল করতে হবে দিনের কোনো একটা নির্দিষ্ট সময়ে বা আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তার মেজাজ খারাপ হচ্ছে কি না। বা খাবারের সঙ্গে কান্নার সম্পর্ক আছে কি না। আপনার শিশু আপনাকে সংকেত দেবে কোন কান্না দিয়ে সে আসলে কী বলতে চায়। এসব সংকেত বুঝতে পারতে হবে।
অনেক সময় ঘুম বা খাবারের রুটিনের কোনো পরিবর্তন হলে বা আশেপাশে বেশি মানুষ থাকলে শিশু অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। শিশুর রুটিন যাতে প্রতিদিন একই থাকে সেটা মাথায় রাখতে হবে।
প্রথম দিকে সব কান্নাই একই রকম লাগতে পারে, কিন্তু ধীরে ধীরে আপনি পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন। আওয়াজের মাত্রা, কান্নার তীব্রতা বোঝার চেষ্টা করতে হবে। শিশুর শরীরী ভাষা থেকে কী চায় সেটা বুঝে নিতে হবে।
কান্নারত শিশুকে শান্ত করার জন্য আপনার বোঝার ও খেয়াল করার চূড়ান্ত পরীক্ষা দিতে হবে। যদি আপনার শিশু কোনো কারণ ছাড়াই কাঁদতে থাকে, তাহলে মাতৃগর্ভে থাকাকালীন আবহাওয়া তৈরি করার কিছু কৌশল খাটানো যায়। সন্তানকে কম্বলের মধ্যে মুড়িয়ে রাখা যেতে পারে, তখন তার মধ্যে নিরাপত্তার বাড়তি একটা বোধ আসে। পাকস্থলী বা এক পাশ থেকে শিশুকে ধরা উচিত। তবে শোয়ার সময় সব সময় পিঠ দিয়ে শোয়া উচিত। আবার কোনো ছন্দময় পরিবেশও তৈরি করা যেতে পারে। যেমন কোনো একটা দোলনায় রেখে আস্তে আস্তে দুলুনি দেওয়া যেতে পারে। গাড়িতে ঘুরিয়ে আনা যেতে পারে। মুখে চোষার জন্য কোনোকিছু দেওয়া যেতে পারে।
বাচ্চাকে শান্ত করার জন্য কয়েকটা ব্যাপার মনে রাখতে হবে। বাচ্চারও অনুভূতি আছে। তাদেরও হাসি, আনন্দ, কান্না, রাগ থেকে সব ধরনের অনুভূতি হয়। আপনি যদি বাচ্চার বার্তা ঠিকমতো বুঝতে না পারেন, সে তার অনুভূতির প্রকাশ ঘটাবে। আপনি শিশুকে একজন মানুষ হিসেবে দেখলে আপনার পক্ষে কান্নাটা বোঝা হয়ত সহজ হবে।
তথ্যসূত্রঃ
https://www.parents.com/baby/care/crying/ways-to-soothe-a-crying-baby/
https://www.whattoexpect.com/first-year/photo-gallery/soothing-a-crying-baby.aspx