আপনার শিশুকে পটি ট্রেইন করান একজন এক্সপার্টের মতন!
সন্তান বড় করা নিঃসন্দেহে খুবই তৃপ্তিকর একটা ব্যাপার, বাবা-মা হিসেবে সন্তানকে লালন পালন করাটা বড় একটা প্রাপ্তির আনন্দই। সব বাবা-মাকেই কমবেশি কিছু না কিছু চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে হয়, এর মধ্যে পটি ট্রেনিং অন্যতম। এটা অবশ্যই কঠিন একটা কাজ, তবে ঠিকমতো অনুশীলন করাতে পারলে এখানে চ্যালেঞ্জটা অনেক কমে যাবে। এই পাঁচটি টিপস মেনে চললে আপনার সন্তানকে নিয়ে টয়লেট-অ্যাডভেঞ্চারের সময় অনেকটা চিন্তামুক্ত থাকতে পারবেন।
১) জানুন কখন আপনার সন্তান তৈরি
এটা হচ্ছে পটি ট্রেনিংয়ের একদম প্রথম ধাপ। আপনাকে নিশ্চিত হতে হবে আপনার সন্তান পরের ধাপে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। বাচ্চারা এমনিতে অনেক কৌতূহলী। যে কোনো কিছুতেই তারা প্রথমে খুব উৎসাহ পাবে। কিন্তু এই ট্রেনিং করানোর আগে আপনার মাথায় রাখতে হবে আপনার বাচ্চা এটার জন্য তৈরি কি না। ২০ মাস বয়সী শিশুও ঘন ঘন প্রস্রাব করতে পারে। তবে যখন দেখবেন এক ঘন্টা বা তারও বেশি সময় ধরে সে নিজেকে শুষ্ক রাখতে পারছে, তখন আপনি ধরে নিতে পারেন সে ব্লাডার কন্ট্রোল ঠিকমতো করতে পারছে। শারীরিকভাবে এই ট্রেনিং করার জন্য সে তৈরি হচ্ছে। সে হয়তো নোংরা ডায়পার নিয়ে ঘ্যানঘ্যান করতে পারে, হয়তো নিজে নিজে জামাও বদলে ফেলতে পারে। বা বাথরুমে যাওয়ার কথা মুখে জানাতে পারে। এসবের লক্ষণ হচ্ছে পটি ট্রেনিং করানোর জন্য সে প্রস্তুত হচ্ছে।
২) সঠিক পদ্ধতি ও জায়গা বেছে নিন
সন্তানকে পটি ট্রেনিংয়ের সাথে পরিচয় করানোর জন্য অনেক উপায় আছে। প্রতিটা ফ্যামিলির নিজস্ব একটা ধরন বা রীতি থাকে। সেজন্য আপনি কোন পদ্ধতিতে ট্রেনিং করাবেন, সেটা আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলে ঠিক করে নিতে পারেন। আপনার হাতে যদি সময় থাকে যথেষ্ট, তাহলে তাড়াহুড়ো করতে যাবেন না। অনেক সময় বাচ্চারা টয়লেটে পড়ে যাওয়ার বা ফ্লাশে আওয়াজ শুনেও ভয় পায়। আস্তে আস্তে তাকে টয়লেটের আবহের সাথে অভ্যস্ত করুন। আপনার টয়লেটের ওপর দেওয়ার জন্য একটা সিট বেছে নিন। যদি এটা সম্ভব না হয়, তাহলে আলাদা করে পটি সিট বেছে নিতে পারেন। সেটা আপনি আপনার রুমে এমন কোথাও রাখতে পারেন যেখানে আপনার শিশু স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে, ধীরে ধীরে সেটা আপনি বাথরুমে নিয়ে যেতে পারেন, যাতে আপনার বাচ্চার রুম থেকে বাথরুমের এই মাঝের সময়টা বেশি লম্বা না হয়।
৩) লক্ষণ থেকে বুঝে নিন
এটা পটি ট্রেনিংয়ের জন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। কখন আপনার সন্তান বাথরুমে যেতে হয় সেটা লক্ষণ থেকে বুঝুন। তাকে নিজে নিজে এই লক্ষণগুলো বুঝতে সাহায্য করুন। কখনো কখনো আপনি হয়তো ওর বাথরুমে যাওয়ার ইচ্ছাটা নাও বুঝতে পারেন। সেজন্য আপনি একটা টাইমটেবিল রাখতে পারেন। ধরে নিন, প্রতি ২০ মিনিট পর পর শুরুতে আপনার শিশুকে বাথরুমে নিয়ে যেতে হবে। এরপর আস্তে আস্তে ওর শিডিউল বুঝে এই সময়টা নির্দিষ্ট করতে হবে।
৪) ঠিক সময় বেছে নিন
আপনার সন্তান যদি তৈরিও থাকে আপনি নিজে চাপে থাকা অবস্থায় এই ট্রেনিং করাতে যাবেন না। আপনি যদি অফিসে বা পার্টনারের সঙ্গে কঠিন একটা সময় পার করেন বা বাসা বদলানোর কথা ভাবেন, অথবা নতুন শিশুকে পৃথিবীতে আনার জন্য প্রস্তুতি নেন, তখন আপনার শিশুকে পটি ট্রেনিং করানো স্থগিত রাখুন। আগে সব চিন্তা পার হতে দিন। বাচ্চারা যদি নির্ভার পরিবেশে থাকে তাহলে নতুন কিছুতে তাড়াতাড়ি অভ্যস্ত হতে পারে। এটা বাবা মার ক্ষেত্রেও সত্যি, সেজন্য এই কাজটা আরও বাড়তি মনযোগের দাবি রাখে। আপনি যখন ঠিক করবেন আপনার বাচ্চা পটি ট্রেনিংয়ের জন্য প্রস্তুত, আপনি চাইবেন সে দিনে বা রাতে যে কোনো সময় নিজে নিজে বাথরুমে যেতে পারে। সেজন্য নিশ্চিত করুন সে যাতে দোলনা বা ক্রিব থেকে বের হয়ে বড়দের সাথে এক বিছানায় থাকা শুরু করতে পারে। ।
৫) চাপে থাকবেন না, আনন্দ উপভোগ করুন
মনে রাখবেন, এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া। ধৈর্য লাগবে অনেক, সেজন্য ব্যর্থতায় মুষড়ে পড়বেন না। আপনার সন্তান যদি এক বা দুই সপ্তাহের মধ্যে কোনো রেস্পন্স না করে, তাহলে হয়তো আপনি বেশি আগেভাগে শুরু করে দিয়েছেন। আর যদি ছোটখাটো সাফল্য পান, সেটা উপভোগ করুন। যখন আপনার সন্তান শেষ পর্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে এটা করতে পারবে, তাকে জানান সে দারুণ একটা কাজ করেছে।