শিশুর ত্বকের যত্নে যেসব জরুরি পরামর্শ আপনার জানা প্রয়োজন
আপনার শিশুর ছোট্ট হাত যখন প্রথমবারের মতো আপনি ধরলেন, তখনই নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন আপনার সন্তানের ত্বক কতোটা নাজুক। জন্মের পর কয়েক মাস পেরিয়ে গেলে আপনার শিশুর ত্বকেও পরিবর্তন আসে। তাই সে সময় তার ত্বকের যত্নের রুটিনেও পরিবর্তন আনা উচিত। শিশুর ত্বকে সাধারণত যে সমস্যাগুলো দেখা দেয় সেগুলো হলো শুষ্কতা, লাল লাল ভাব বা র্যাশ ওঠা। বিশেষজ্ঞদের মতানুযায়ী ৭-১২ মাস বয়সী শিশুদের ত্বকের যত্নে যা যা করতে হবে তা নিচে উল্লেখ করা আছে।
প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন:
শিশুর ত্বকে সব সময় প্রাকৃতিক উপাদান ব্যবহার করুন। ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম থেকে শুরু করে বেবি ওয়াশ, শ্যাম্পু, কম্বল, পোশাক সব কিছুই যতোটা সম্ভব প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরী করা জিনিস ব্যবহার করুন। লোশন হিসেবে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। শ্যাম্পু ও সাবানের ক্ষেত্রেও প্রাকৃতিক উপাদানের দিক নজর দিন এবং চেষ্টা করুন পরিষ্কার করার জন্য সব সময় সুতি কাপড় ব্যবহার করতে। শিশু যে ঘরটিতে থাকবে সে ঘরে যাতে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস যাওয়া আসা করতে পারে সে দিকে খেয়াল রাখুন। দিনের বেলায় ঘরে যেনো অবশ্যই আলো থাকে।
মালিশ:
শিশুর শরীরে প্রতিদিন অন্তত একবার মালিশ করুন। প্রাকৃতিক উপাদানে তৈরী তেল – যেমন জলপাই বা বাদামের তেল ব্যবহার করুন। গোসলের আগে মালিশ করতে পারেন। তেল মালিশ করলে শিশুর শরীরের অতিরিক্ত ময়লা দূর হয়। তাছাড়া হাড় গঠনে এবং রক্ত সঞ্চালনেও তেল মালিশ খুব উপকারি ভূমিকা পালন করে।
মাঝে মাঝে শিশুর মাথায় তেল মালিশ করুন। এতে করে শিশুর মাথা দোলনায় থাকার কারণে যে শুষ্কতা তৈরী হয় সেটা মিলিয়ে যায়। ফাঙ্গাস ইনফেকশন থেকে শিশুর মাথার ত্বককে বাঁচাতে প্রাকৃতিক তেল দিয়ে নিয়মিত মালিশ করুন।
গোসল:
শিশুর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় একদিন পরপর গোসল করান। শিশুর ত্বককে সুন্দর ও নির্মল রাখতে সবসময় শিশুর ত্বককে পরিষ্কার রাখুন। শিশুকে একটি গামলায় কুসুম গরম পানি দিয়ে তার শরীর পানিতে ডুবিয়ে রাখুন, শুধু মাথা পানির বাইরে রাখুন। এ সময় শিশুর পিঠ এবং ঘাড় ভালোভাবে ধরে থাকুন। একটি সুতির নরম কাপড় দিয়ে আপনার শিশুর পুরো শরীর ভালোভাবে মুছে নিন।
পুষ্টি:
শিশুকে গোসলের পর পুরো শরীরে ভালো ভাবে ময়েশ্চারাইজার দিয়ে মালিশ করুন, এতে তার ত্বক পুষ্টি গ্রহণ করবে। শিশুর ত্বকের জন্য যেসব লোশনে অলিভ অয়েল, বাদামের তেল বা নারকেল তেল আছে সেসব লোশন ব্যবহার করুন। এতে শিশুর ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। হাতে বেশি করে লোশন নিয়ে শিশুর শরীরে ভালো করে মালিশ করুন। বিশেষ করে যেসব জায়গায় র্যাশ ওঠে সেসব জায়গায় ভালোভাবে মালিশ করুন।
ডায়পার ক্রিম:
আপনার সন্তান যদি সব সময় ডায়পার ব্যবহার করে তাহলে সাথে ডায়পার ক্রিম রাখুন। ডায়পার পরার কারণে শিশুর ত্বকে দ্রুত র্যাশ ওঠে, বিশেষ করে ডায়পার পরানো হয় যে জায়গায়। গরম এবং আর্দ্র আবহাওয়ার কারণে শিশুর ত্বকে র্যাশ বেশি ওঠে। প্রত্যেকবার খাওয়ানোর পর সম্ভব হলে ডায়পার পরিবর্তন করুন। এরপর ডায়পার কেয়ার ক্রিম ব্যবহার করুন। ডায়পার কেয়ার ক্রিমে জিংক অক্সাইড রয়েছে যাডায়পার র্যাশ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
তথ্যসূত্রঃ
- https://www.thebump.com/a/baby-skincare-101
- https://www.momjunction.com/articles/most-helpful-tips-to-keep-your-babys-skin-healthy_00293/#gref