নবজাতকের জন্য সময়সূচি: আপনাকে যা যা জেনে রাখতে হবে
ইতোমধ্যেই আপনি বুঝে গিয়েছেন যে নবজাতকের কারণে বাবা-মায়ের দৈনন্দিন জীবনের রুটিনে অনেক পরিবর্তন আসে। যেহেতু নবজাতক শিশু দুই থেকে তিন ঘন্টার বেশি ঘুমায় না, কাজেই পুরো বাড়িতে বড় মানুষদের জন্য ঘুম একটা বিলাসী ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। সারাক্ষণ বাচ্চাকে খাওয়ানো এবং ডায়পার পরিবর্তন করতে করতে মায়েরা ঘুমের কথা প্রায় ভুলেই যান। এতে করে তারা নিজেরাও খিটখিটে হয়ে পড়েন।
কেন আমার নবজাতক শিশুটি কোনো সময়সূচী মেনে চলে না:
আপনি যেমন দিন ও রাতের কাজ আলাদা করে নিতে পারেন, দিনে সব কাজ শেষ করে রাতের সময়টা বিশ্রাম ও ঘুমের জন্য রাখেন, আপনার নবজাতক কিন্তু সেভাবে দিন ও রাতের পার্থক্য করতে পারে না। দিন বা রাত যা-ই হোক, আপনার শিশু দুই বা তিন ঘন্টা ঘুমিয়েই উঠে পড়বে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আস্তে আস্তে সময়ের সাথে শিশু বুঝতে পারে যে রাতের সময়টা ঘুমের সময়।
যেহেতু এখন আপনি জানেন যে আপনার শিশুকে বাসায় আনার পর থেকে আপনার ও আপনার পরিবারের স্বাভাবিক কাজকর্মের সময়সূচীতে দারুণভাবে পরিবর্তন আসতে পারে, তাই আপনার জীবনের এই নতুন অধ্যায়ের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে কিছু পরামর্শ অনুসরণ করা যেতে পারে।
খাওয়ানোর সময়সূচী:
খাওয়ানর সময়সূচী নিয়ে খুব বেশি চিন্তার কিছু নেই। বাচ্চার যখন ক্ষুধা পাবে তখনই তাকে খেতে দিন। এভাবে খেতে খেতেই বাচ্চার খাওয়ার একটা সূচী তৈরী হয়ে যাবে। বাচ্চা যদি ২-৩ ঘন্টা পর পর খেতে চায় তাতে মোটেও আশ্চর্য হবেন না। শিশুর শরীরের পরিপূর্ণ বিকাশ এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টির জন্য শিশুকে ঘনঘন খেতে দিতে হবে। শিশুর ক্ষুধা পেলে মাঝে মাঝে সে বিরক্তি দেখাবে, হাত চুষবে, কাপড় খাবে অথবা দুধ খুঁজবে। আপনার নিজের শরীরকে বিশ্রাম দেয়ার জন্য, বাচ্চা ঘুমালে সেই সাথে আপনিও ঘুমিয়ে নিন।
ঘুমের সময়সূচী:
শিশুকে দিন ও রাতের পার্থক্য বোঝাতে দিনের বেলা আপনার রুম আলোয় ঝলমলে রাখুন ও রাতের বেলায় আলো কমিয়ে রাখুন। দিনের বেলা শিশু আশে পাশের বিভিন্ন শব্দ শুনতে পাবে। ঘরের বিভিন্ন জায়গায় কাজ করার সময় তাকে পাশেই রাখুন। তবে রাতের বেলায় একটু ফিসিফিসিয়ে কথা বলুন, জানালা দরজা পর্দা দিয়ে ঢেকে দিন। এভাবে আপনার শিশু বুঝে যাবে যে দিনের বেলা কাজ করতে হয় এবং রাতে ঘুমাতে হয়।
খেলার সময়সূচি:
এক বা দুই মাস বয়স পেরিয়ে গেলে শিশু চারপাশের পরিবেশের বিভিন্ন জিনিসের উপর প্রতিক্রিয়া দেখাতে শুরু করে। এই সময়েই শিশু খেলতে শেখে। যদি শিশু পেট ভরে খাওয়ার পরেও না ঘুমায়, তাহলে ওই সময়ে তার সাথে খেলাধুলা করুন। পেটের উপর ভর দিয়ে উলটো হয়ে শুয়ে খেলনা দেখাও শিশুর জন্য এক ধরনের খেলা। এটা আপনার এবং আপনার সঙ্গীর সাথে শিশুর যোগাযোগের একটা সুন্দর মাধ্যমও হতে পারে। শিশু যখন জেগে থাকবে চাইলে তাকে নিয়ে পাশের বাড়িতে বেড়াতেও যেতে পারেন। শুধুমাত্র দিনের বেলায় খেলতে শেখালে শিশুর পক্ষে দিন ও রাতের পার্থক্য বুঝতে সুবিধা হবে।