a
Sorry, no posts matched your criteria.
My Bookmark Category
  • Please login to view Category

বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় সমস্যা ও তার সমাধান

JFB Bookmark(0)

No account yet? Register

সন্তান জন্মের প্রথম কয়েক সপ্তাহে বুকের দুধ খাওয়ানোর ভালো মন্দ দুই রকম অভিজ্ঞতাই হতে পারে । একদিকে আপনি যেমন আপনি চান সন্তানের জন্য সবচেয়ে প্রাকৃতিক খাবারটা খাওয়াতে, অন্যদিকে বুকের দুধ খাওয়াতে গেলেও একজন মাকে কিছু সমস্যার মুখোমুখিও হতে হয়। বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় আপনি যে ধরনের সমস্যার মুখোমুখি হতে পারেন তা জানা থাকলে সেগুলো আপনার কাজে লাগতে পারে। এই সমস্যা সমাধানে অভিজ্ঞরা যেসব পরামর্শ দেন সেগুলোও জেনে নিতে পারেন।

বিলম্বিত দুধ সরবরাহ: 

সন্তান জন্মের পর বুকে দুধ আসতে অনেক সময় দেরি হয়। প্রথমে বুকে যে দুধ আসে সেটা একটু হলুদ বর্ণের এবং ঘন। এই দুধকে কলোস্ট্রাম বা বাংলায় শাল দুধ বলে। সন্তান জন্মের পর আপনার শরীর থেকে প্লাসেন্টা বের হবার পর আপনার শরীর দুধ উৎপাদন শুরু করে। তবে দুধ উৎপাদন হতে এক থেকে দুইদিন সময় লাগে।

সমাধান: 

আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন। অনেক সময় প্রসবের পর বিভিন্ন ওষুধের প্রভাবে দুধ উৎপাদনে দেরি হতে পারে। প্রথমেই বিমর্ষ হবেন না এবং প্রথম দিনে যতক্ষণ বুকে দুধ না আসে ততক্ষণ বাচ্চাকে দুধ খাওয়ানোর চেষ্টা করার প্রয়োজন নেই। বুকের দুধ খাওয়ানো অসীম ধৈর্য্যের ব্যাপার। তবে একবার বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করলে এটা শিশুর পুষ্টির জন্য খুবই উপকারি।

স্তনের শক্ত হয়ে যাওয়া: 

বুকে দুধ আসার পরে নতুন যে সমস্যা দেখা দেয় সেটা হলো স্তনের শক্ত হয়ে যাওয়া। সাধারণত সন্তান প্রসবের দুই থেকে তিন দিন পর যখন আপনার শরীর আপনার নবজাতকের জন্য পুষ্টি সরবরাহ করতে প্রস্তুত তখন থেকে এই সমস্যা শুরু হয়। এই সময় আপনার স্তন প্রচন্ড শক্ত ও দৃঢ় হয়ে যাবে। এই সমস্যা থেকে অনেক সময় দুধ সরবরাহ কমে যায়। কাজেই ভবিষ্যতে সমস্যা এড়াতে স্তনের শক্ত হয়ে যাওয়া সমস্যার সমাধান করুন।

সমাধান: 

আপনার বাচ্চাকে ঘন ঘন দুধ খাওয়ান। দুধ খাওয়ানোর সময় চেষ্টা করবেন বাচ্চার মুখ বড় করে হা করাতে। বারবার করে দুটি স্তনই পান করান যাতে কোনো স্তনই শক্ত না হয়ে যায়। তারপরেও যদি স্তনে শক্ত অনুভব করেন তাহলে ভালোভাবে মালিশ করুন এবং গরম পানি ব্যবহার করুন। এতে আপনি আরাম বোধ করবেন। গরম পানি ব্যবহার করার পর স্তনে ভালোভাবে পাম্প করে দুধ বের করে রাখুন। কর্মজীবী মহিলা হলে এই দুধ ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন। পরবর্তীতে আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারেন।

 

 

স্তনের শিরায় দুধ জমে থাকা: 

স্তনের শিরায় দুধ জমে থাকার অনেক কারণ আছে। অতিরিক্ত দুধ সরবরাহের কারণেও এটা হতে পারে। যদি দ্রুত চিকিৎসা না করান তবে শিরায় বিভিন্ন ভাইরাস সংক্রমণ হতে পারে। এ থেকে মাসটিটাইটিস নামক রোগ হতে পারে। স্তনে এই রোগ ধরা পড়লে দ্রুত নিরাময়ের ব্যবস্থা করুন।

সমাধান: 

স্তনে ভালো করে মালিশ করুন ও গরম পানির সেক নিন যাতে শিরা নরম হয়। সন্তানকে ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়ান, প্রয়োজনে ঘন্টা ধরে খাওয়ান। দুধ খাওয়ানোর সময় চেষ্টা করবেন বাচ্চার মুখ বড় করে হা করাতে। যদি বুকের শিরা শক্ত হয়ে যায় তাহলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ যেমন স্তনে ব্যথা, জ্বর দেখা দেয়। দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ডাক্তার পরীক্ষা করে দেখবেন আপনার মাসটিটাইটিস হয়েছে কি না। যদি হয় তাহলে ডাক্তার আপনাকে এন্টিবায়োটিকস দেবেন। অথবা যদি রোগের সংক্রমণ বেশি হয় তবে অপারেশন করাও লাগতে পারে।

স্তনবৃন্তে ফাটল: 

সন্তান প্রসবের পর কিছুদিন স্তনবৃন্তে ফাটল দেখা দিতে পারে। এতে প্রচুর ব্যথা হয়। এর পিছনে প্রধান কারণ হচ্ছে শিশু ঠিকমতো বোঁটা ধরে স্তনপান করে না। ফলে স্তনবৃন্তে আলাদা চাপ পড়ে এবং স্তনপান করাতে গেলে ব্যথা অনুভুত হয়। এই ফাটল থেকে রক্তপাতও হতে পারে। তাই স্তনপানের সঠিক নিয়ম মেনে বাচ্চাকে দুধ খাওয়াতে হবে যেন ফাটল না ধরে।

সমাধান:  

আপনার কাছাকাছি ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সন্তানকে স্তনপান করানোর সঠিক নিয়ম ডাক্তারের কাছ থেকে শিখে নিন। শিশুর মুখে স্তনের বেশিরভাগ অংশ পুরে দেবেন যেনো জোরে টান দিতে না পারে এবং স্তনবৃন্তে কামড় দিতে না পারে। যদি স্তনবৃন্তে ফাটল ধরে তবে শিশুকে অন্য স্তন থেকে দুধ পান করান। ফাটল ধরা জায়গায় মলম লাগান যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে যান।

স্বল্প দুধ সরবরাহ:  

আপনি হয়তো ভাবতে পারেন আপনার দুধের সরবরাহ কমে গেছে কিন্তু আসলে দুধের সরবরাহ মানে স্তন ভারি হয়ে যাওয়া না। আপনার শিশুর ঠিক যতোটুকু দুধ প্রয়োজন, অতোটুকু আপনার শরীর উৎপাদন করা মানেই আপনার দুধের সরবরাহে স্বল্পতা নেই।

সমাধান: 

সঠিক পরিমাণ দুধের সরবরাহের জন্য আপনার শিশু যতোবার দুধ খেতে চাইবে ততোবার তাকে খেতে দিন। ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশনের মতে, শিশু সন্তান জন্মের পর ৬ মাস শুধু বুকের দুধ খাবে এবং পরবর্তীতে ২ বছর বয়স পর্যন্ত স্তনপান করবে। শিশুকে বোতলের দুধ বা আলাদা ভাবে চুষনি ব্যবহার করতে দেবেন না। অন্যান্য কাজ থেকে নিজেকে কিছুটা দূরে রাখুন এবং শিশুর দিকে মনোনিবেশ করুন, এতে দুধের সরবরাহ বাড়ে। নিজের শরীরের পুষ্টি বজায় রাখতে শাক-সবজি, ফলমূল, আমিষ এবং শর্করা জাতীয় খাবার খান যাতে করে শিশুকে দিন রাত পর্যাপ্ত পরিমাণ দুধ খাওয়াতে পারেন।

 

তথ্যসূত্রঃ

  1. https://www.babycenter.com/nursing-problems-solutions
  2. https://www.thebump.com/real-answers/topics/nursing-problems-solutions

Copyright © 2021 Marico. All Rights Reserved.