আপনার সোনামণিকে রোদ থেকে বাঁচাতে কী কী করবেন?
গরম হোক বা ঠান্ডা, আপনার সোনামণি সারাক্ষণ বাড়িতে থাকলে বিরক্ত হয়ে উঠবে। ছোট্ট শিশুদের বেড়ে ওঠার জন্য বাইরের আলো-বাতাস ভীষণ প্রয়োজন। বিশেষ করে শরীরে ভিটামিন ডি-এর ঘাটতি যেনো না হয় তাই শিশুকে মাঝে মাঝে রোদে বের করা উচিত। তবে শিশুকে এই গরমে রোদে বের করলে অতিবেগুনী রশ্মির জন্য শরীরে উঠতে পারে নানা ধরনের র্যাশ, ঘামাচি, লাল লাল দাগ। শিশুকে গরমে বাইরে বের করলে কিছু পরামর্শ আছে যেগুলো মেনে চললে শিশুকে গরমে বাইরেও বের করতে পারবেন আবার রোদের তাপ থেকে বাঁচাতেও পারবেন।
১। তাপমাত্রা বেশি থাকলে বাইরে বের হওয়া থেকে বিরত থাকুন:
সাধারণত সূর্যের তাপমাত্রা সকালে ১০টার পর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বেশি থাকে। তাই আপনার সোনামণিকে সকাল ১০টার আগে বা বিকেল বেলায় বাইরে ঘুরতে নিয়ে যান। এতে করে আপনার শিশু ঘামবে না, শরীর ঠান্ডা থাকবে। শরীরে র্যাশ ওঠার সম্ভাবনাও কম থাকবে।
২। রোদ নিরোধক পোশাক নির্বাচন করুন
আপনার শিশুর জন্য এমন পোশাক নির্বাচন করুন যা সহজেই রোদ নিরোধক। হালকা সুতির পোশাক এ সময় খুবই উপযোগী। পোশাক সবসময় ঢিলেঢালা হতে হবে যেনো বাতাস চলাচল করতে পারে।ফুল হাতা শার্ট এবং বড় ঢিলা প্যান্ট হতে পারে আপনার শিশুর পোশাক। এ ছাড়া বড় হ্যাট পরালে সহজেই চোখে এবং মাথায় রোদের তাপ লাগবে না।
৩। বেবি পাউডার ব্যবহার করুন
গরমে ঘরে বা বাইরে সবসময় বেবি পাউডার ব্যবহার করুন। বিশেষ করে শিশুর যেসব জায়গায় ঘাম হয় যেমন গলার ভাঁজে, ঘাড়ে, বগলে, কুচকিতে, হাঁটুর নিচের সব স্থানে কিছু সময় পর পর পাউডার লাগান। এতে করে শিশুর কোমল ত্বকে ঘামাচি বা র্যাশ উঠবে না। ত্বকের কোমলতাও বজায় থাকবে। বাইরে গেলে ব্যাগে সবসময় বেবি পাউডার রাখুন।
৪। ছায়ায় থাকুন
সবসময় চেষ্টা করুন ছায়ায় থাকতে। রোদ বা গরম এড়িয়ে চলতে ব্যাগে সবসময় ছাতা রাখুন। বাইরে রোদের প্রতিফলন হয় এমন জিনিস যেমন গ্লাস, বালি, পানি এড়িয়ে চলুন।
৫। শিশুকে নিয়মিত গোসল করান
ছোটো শিশুদের শরীরে খুব বেশি ময়লা লেগে থাকে না যেহেতু শিশুকে আমরা বাইরে কম বের করি। গরমে শিশুকে সপ্তাহে দু বার ভালোভাবে কম ক্ষারযুক্ত সাবান এবং বেবি শ্যাম্পু দিয়ে গোসল করিয়ে দিন। গোসলের পর লোশন এবং পাউডার মাখান। এতে করে শিশুর শরীরে র্যাশ ওঠার পরিমাণ কমে যাবে। শিশুর ত্বকের আর্দ্রতা বজায় থাকবে। ত্বক নরম, কোমল ও মসৃণ হয়ে উঠবে।
৬। শিশুকে তরল পান করান
আপনার শিশুর বয়স যদি ৬ মাসের বেশি হয় তবে তাকে পানিসহ বিভিন্ন ফলের রস বেশি করে খেতে দিন। এ সময় কমলার রস শিশুর শরীরে ভিটামিন সি যোগায়। এছাড়া বেদানার রস শিশুর শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ঠিক রাখতে সাহায্য করে। কোষ্ঠকাঠিন্য জাতীয় কোনো রোগ যাতে না হয় সেজন্য শিশুকে ঘন ঘন তরল জাতীয় খাবার যেমন জুস, পানি, দুধ, নরম খিচুড়ি, বাচ্চা মুরগির ঝোল খেতে দিন।
শিশু জন্মের প্রথম ৬ মাস সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি তার কোমল ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। সূর্যের আলোর সংস্পর্শে আসলে শিশুর ত্বকে র্যাশ ওঠার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আবার অন্যদিকে শিশুর শরীরে ভিটামিন ডি এর ঘাটতি পুরণের জন্য সূর্যের আলো জরুরি। তাই বাবা-মায়ের চেষ্টা করতে হবে সকালের বা বিকালের নরম রোদ যেনো শিশুর শরীরে লাগে এবং সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে যেনো শিশু সুরক্ষিত থাকে সেজন্যেও সচেষ্ট থাকতে হবে।