বৃষ্টির এই মৌসূমে আপনার বাচ্চাকে অসুস্থতা থেকে রক্ষায় ছয়টি ব্যাপারে নজর দিন
বর্ষাকাল আমাদের মনকে প্রশান্তি দেয়। তবে কখনও কখনও এটি আপনার ছোট্ট বাচ্চার উপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এই মৌসুমে নবজাতক বাচ্চারা জীবাণু এবং ব্যাকটেরিয়ার শিকার হয়। ফলস্বরূপ, তারা সহজেই ফ্লু বা ঠান্ডায় আক্রান্ত হতে পারে।
তবে অন্যান্য প্রতিটি সমস্যার মতো এই সমস্যারও সমাধান রয়েছে। এই নিবন্ধে, বর্ষায় আপনার শিশুর যত্ন নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো নিয়ে আমরা বিশদভাবে আলোচনা করব। সুতরাং, সাথে থাকুন।
১. ভেজা কাপড় বাচ্চা থেকে দূরে রাখুনঃ
একমাত্র জায়গা যেখানে স্যাঁতসেঁতে জামাকাপড় ভাল দেখায় তা হল লন্ড্রি। আপনাকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে যেন আপনার বাচ্চা কখনই স্যাঁতসেঁতে বা ভেজা পোশাক পরে না থাকে। বর্ষার বাতাস এমনিতেই কিছুটা ঠাণ্ডা। ভেজা পোশাকের সাথে যুগল বেধে তা বেশ বিপর্যয়কর হতে পারে।
তাই গোসলের পরে বাচ্চাদের শরীর ভাল করে মুছুন। অন্যথায়, তারা কাশি, সর্দি, ফুসকুড়ি, জ্বর বা অ্যালার্জিতে আক্রান্ত হতে পারে।
২. পরিস্কার-পরিছন্নতা বজায় রাখুনঃ
পরিচ্ছন্নতা শিশুদের মনে বেশ প্রভাব বিস্তার করে। সুতরাং, এক দিন পরপর আপনার শিশুকে গোসল করান। রোগ বালাই দূরে রাখতে তাকে দৈনিক স্পঞ্জ গোসলও করাতে পারেন। তাদের ঘাড়, আন্ডারআর্মস, যৌনাঙ্গে এবং শরীরের অন্যান্য ভাঁজগুলো ভাল করে পরিষ্কার করতে হবে। তাদের নাজুক শরীর অবশ্যই নমনীয় ভাবে পরিস্কার করতে হবে। দেহের রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখতে গোসলের পূর্বে নিরাপদ বেবি তেল মালিশ করতে পারেন। এছাড়াও,গোসলের পরে বাচ্চাদের শরীর ভাল করে মুছে শরীরে একটি হালকা হাইপো-অ্যালার্জিক বেবি ময়েশ্চারাইজার প্রয়োগ করুন।
তা ছাড়া, সময় মতো ডায়াপার পরিবর্তন করতে ভুলবেন না। ত্বককে বিশ্রাম দিতে পর্যাপ্ত ডায়াপার বিরতি দেওয়া উচিত।
৩. শিশুকে শুকনো রাখুনঃ
ভেজা কাপড় ছাড়াও, আপনার অবশ্যই বাচ্চাকে ঘাম থেকে দূরে রাখতে হবে। তাপমাত্রায় ঘন ঘন পরিবর্তন আপনার শিশুকে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘামিয়ে তুলতে পারে। সুতরাং, তাদের পাতলা সুতির পোশাক পরান। এছাড়াও, বাচ্চার শরীর ঘন ঘন মুছার অভ্যাস তৈরি করুন যাতে সে ঘাম মুক্ত থাকে।
৪. মশারি ব্যবহার করতে হবেঃ
দুর্ভাগ্যক্রমে, বর্ষাকাল আমাদের চারপাশে মশার উপস্থিতি বৃদ্ধি করে। সুতরাং, আপনার বাচ্চাকে মশার কামড় এবং রোগ থেকে রক্ষা করার জন্য তাদের মশারির নিচে রাখতে হবে। যদি মশারি ব্যবহার করতে না চান, তবে মশা মারার স্প্রে এবং কয়েল কিনতে পারেন। তবে নিশ্চিত করুন যে এগুলো শিশু-বান্ধব।
৫. ফুটানো/পিউরিফাইড পানিঃ
আপনার বাচ্চাকে সবসময় ফুটানো বা পিউরিফাইড পানি পান করাতে হবে। ভালোভাবে সিদ্ধ করা পানি বা পিউরিফিকেশন ফিল্টার দ্বারা ফিল্টার করা পানি পরিপূর্ণভাবে পরিশুদ্ধ হয়। এটি আপনার শিশুর জন্য উপযুক্ত। তাই শিশুর জন্য যে কোনও ধরণের খাবার বা রস প্রস্তুত করতে এই পানি ব্যবহার করুন। তবে আপনার বাচ্চাকে দেওয়ার আগে পানি ভালো করে ঠান্ডা করে নিন।
৬. আপনার ঘর পরিষ্কার রাখুনঃ
আপনার বাড়ির বেবিপ্রুফ রাখার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল এটি সর্বদা পরিষ্কার রাখা। এটি বিশেষত প্রযোজ্য যদি আপনার শিশু হামাগুড়ি দিতে শিখে। যদি ময়লা বা জীবাণু জমে থাকে তবে তা বিভিন্ন রোগ ছড়ায়। সুতরাং, নিয়মিত জীবাণুনাশক দিয়ে মেঝে এবং আসবাবপত্র পরিষ্কার করুন। অভ্যন্তরীণ নিষ্কাশন ব্যবস্থা বা বাথরুমের পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে ভুলবেন না। বিশেষত, ঘরের কোণাগুলোর যত্ন নিন যাতে মশারা সেখানে বাসা বাঁধতে না পারে। সম্ভব হলে বর্ষার শুরুর আগে পুরো বাড়িতে পেস্ট কন্ট্রোল করিয়ে নিন।
আমাদের ছোট্ট বাচ্চার সুন্দর হাসি যদি রোগ দ্বারা ম্লান হয়ে যায় তা আমরা কখনই পছন্দ করব না। এই জিনিসগুলো তদারকি করে, আপনি আপনার ছোট্ট বাচ্চাকে নিরাপদ রাখতে পারেন। সুতরাং, এই টিপসগুলি অনুসরণ করুন এবং আপনার শিশুর লালন পালনের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর পরিবেশ গড়ে তুলুন।